বিডিনিউজ: প্রিয়া সাহাকে বাংলাদেশ সরকার গ্রেপ্তার করতে যাচ্ছে কি না, সে বিষয়ে জানতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের কাছে ফোন এসেছে ওয়াশিংটন থেকে।
প্রিয়া সাহা: ‘মশা মারতে কামান দাগাতে চান না’ কাদের
নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন প্রিয়া সাহা
যুক্তরাষ্ট্রের একজন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোন পেয়ে মোমেন তাকে আশ্বস্ত করেছেন, সে ধরনের কোনো পদক্ষেপ সরকার নিচ্ছে না।
দলিত সম্প্রদায় নিয়ে কাজ করা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘শারি’র পরিচালক প্রিয়া সাহা ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে ওয়াশিংটনে আয়োজিত এক সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে গত ১৭ জুলাই হোয়াইট হাউজে গিয়ে ডনাল্ড ট্রাম্পের কাছে অভিযোগ করেছিলেন।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে বলেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা মৌলবাদীদের নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। প্রায় ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান নিখোঁজ (ডিজঅ্যাপিয়ার্ড) হয়েছেন। তারা যেন দেশে থাকতে পারেন, সেজন্য ট্রাম্প যেন সহায়তা করেন।
তার ওই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় বিভিন্ন মহলে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও কঠোর ভাষায় তার সমালোচনা করেন।
তবে পরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, প্রিয়া সাহার ব্যাখ্যা শোনার আগে তড়িঘড়ি কোনো আইনি ব্যবস্থা না নিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পেয়েছেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তার সঙ্গে তার টেলি আলাপের বিষয়ে বলেন, “তিনি জানতে চেয়েছিলেন, আমরা তাকে (প্রিয়া সাহা) গ্রেপ্তার কিংবা তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা করছি কি না? আমি বলেছি, সরকার তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা করবে বলে আমার মনে হয় না।”
প্রিয়া সাহাপ্রিয়া সাহাশুরুতে প্রিয়া সাহার বক্তব্যকে ‘রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল’ বলেছিলেন ওবায়দুল কাদের। প্রিয়া সাহা দেশে ফিরলে তাকে আটকের ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
তবে এরপর বিভিন্ন স্থানে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে যতগুলো মামলার আবেদন হয়েছিল, আদালত তা খারিজ করে দেয়।
ওয়াশিংটনের ওই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী মোমেন বলেন, “ওই কর্মকর্তা আমাকে বলেছেন, প্রিয়া সাহা এখন শঙ্কিত। আমি তাকে বলেছি, (দেশে ফেরার পর) তিনি সরকারের কাছে নিরাপত্তা চাইতে পারেন।
“বাংলাদেশে অনেক বিষয়ে অনেকেই কথা বলেন, আমরা তাদের গ্রেপ্তার করি না,” যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাকে বলেছেন মোমেন।
সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন, প্রিয়া সাহা যে অভিযোগ করেছেন, তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন। বরং বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত।
প্রিয়া সাহা বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। সমালোচনায় পড়ার পর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে সংগঠনটি।